-->
বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কর্ম বিরতির পথে সরকারি কর্মচারীরা

বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কর্ম বিরতির পথে সরকারি কর্মচারীরা


বেতন বৈষম্য নিরসন, ৫০শতাংশ মহার্ঘ ভাতা, নতুন পে-স্কেলসহ ৭ দফা দাবি আদায়ে ফের কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ। 

সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেছ আলী বলেছেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে সোচ্চার হয়েছে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তা চলবে। 

কী ধরণের কর্মসূচি আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সারাদেশে মানববন্ধন, কলম বিরতি, কালোব্যাচ ধারণ বা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের মতো কর্মসূচি হতে পারে। 

কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক ও ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরামের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান বলেন, সংবাদ সম্মেলনের আগে আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি ঠিক করা হবে। প্রাথমিকভাবে সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি দেয়া হতে পারে। পর্যায়ক্রমে কালোব্যাচ ধারণ, স্মারকলিপি প্রদান এবং প্রয়োজন হলে কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিও দেওয়া হবে। 

তিনি বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমাদের পেটে ভাত নাই, বেতনের টাকা দিয়ে ১০দিনও চলে না। দাবি আদায়ে অনেক কান্নাকাটি করেছি, মাঝখানে বন্ধ ছিলো, আবারও কাঁদতে হবে। না কাঁদলে মাও দুধ দেন না। 

নির্বাচনের আগে দাবি পূরণের সম্ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ সরকারের হাতে, আমরা সরকারকে বলতে পারবো কিন্তু সরকারের বিপক্ষে যেতে পারবো না। 

উল্লেখ্য, দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরেই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ। সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশ শেষে গত ৩ জুন ঢাকায় মহাসমাবেশের কথা ছিলো। তবে পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে সামনে রেখে সরকারের আশ্বাসে তা স্থগিত করা হয়। এরপর আর বিষয়টি এগোয়নি। তাই নতুন করে কর্মসূচি কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায়ে ঐক্য পরিষদ’-এর ৭ দফা দাবিসমূহ:

১। পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তর্বতীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করতে হবে।

২। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখাতে হবে।

৩। সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদ পদবী পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।

৪। টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহাল সহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

৫। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ।

৬। আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।

৭। বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি
পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে। 

0 Response to "বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কর্ম বিরতির পথে সরকারি কর্মচারীরা"

Post a Comment

Ads