
স্কুলে কোটি টাকার ডিজিটাল হাজিরা মেশিন অকেজো
‘মানহীনতার’ অভিযোগ তুলে শিক্ষকদের অনেকে বলছেন, ব্যবহার না করায় অধিকাংশ মেশিন বিকল হয়ে গেছে।
তাছাড়া কিছু বিদ্যালয় বরাদ্দ পেয়েও মেশিন স্থাপন করেনি। এতে প্রকল্পটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর প্রতিষ্ঠান প্রধানরা বলছেন, সরকারের এ কর্মসূচির পুরোটাই ভেস্তে গেছে।
যদিও অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি, জাতীয়ভাবে ব্যবহার না হওয়ায় তারাও ব্যবহার করছেন না। শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় পর্যবেক্ষণে এসব মেশিন বসানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
বুধবার ৪৪ নম্বর পালং তুলাসার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৪ নম্বর নশাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৬ নম্বর পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ডিজিটাল হাজিরা মেশিনগুলো অকেজো হয়ে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু এসব বিদ্যালয়েই নয়, পুরো শরীয়তপুর জেলার ৬৯৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকটি বাদে প্রায় সব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য কেনা দেড় কোটি টাকার ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয়।
শিক্ষকদের দৈনিক হাজিরা মেশিনে পর্যবেক্ষণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সেগুলো বসানোর নির্দেশ দেয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কক্ষে হাজিরা মেশিনগুলো স্থাপন করা হয়।
বার্ষিক ‘স্লিপ ফান্ডের’ খরচ থেকে প্রতিটি ১৮ হাজার ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয়ে মেশিনগুলো বসানো হয়েছিল।
শরীয়তপুর সদরের পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান সেলিনা বেগম বলেন, “ডিজিটাল হাজিরা মেশিনটি পুরাতন ভবনে বসানো আছে। এখন আমরা নতুন ভবনে ক্লাস করি। সেটি কেমন আছে বলতে পারব না; বিষয়টি পুরুষ শিক্ষকরা বলতে পারবেন।”
নশাসন প্রাথমিক বিদ্যারয়ের সহকারী শিক্ষক মোরশেদা বেগম বলেন, “আমাদের স্কুলে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনার জন্য টাকা বরাদ্দ এলেও আমাদের স্কুলে সেটি কেনা হয়নি।”
নড়িয়া উপজেলার দিগম্বর পট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোহিনুর আক্তার বলেন, “২০১৮-১৯ অর্থ বছরে আমাদের স্কুলে ‘স্লিপের’ ৪০ হাজার টাকা থেকে এ ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনার কথা ছিল। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে আমি সেটি অন্য কাজে ব্যবহার করেছি।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডামুড্যা, ভেদরগঞ্জ, গোসাইরহাট উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা বলেন, জেলার সব বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন বসানোর জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল; যেন শিক্ষার মান উন্নয়ন হয়। বর্তমানে সব মেশিনই নষ্ট।
সরেজমিনে শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের দেয়ালে ডিজিটাল হাজিরা মেশিনটি দেখা গেলেও সেটি সচল ছিল না।
৪৪ নম্বর পালং তুলাসার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়য়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক বলেন, “আমাদের ডিজিটাল হাজিরা মেশিনটি একটি কক্ষের দেয়ালে বসানো আছে। জাতীয়ভাবে ব্যবহার না করার কারণে আমরাও ব্যবহার করি না। তাই মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, অনেক শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসতে দেরি করেন। অনেকে দুপুরে ছুটি দিয়ে দেন। এ জন্য যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সফলতা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ বলেন, “আমি এ জেলায় নতুন এসেছি। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।”
শিক্ষা ডটকমের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
------------------------------
প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, বৃত্তি, উচ্চশিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সংবাদ শিরোনাম, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, ছবি, ভিডিও পেতে শিক্ষা ডটকমের ফেইসবুক গ্রুপে ফলো করুন ( ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে )।
------------------------------
শিক্ষা ডটকমের ফেইসবুক পেইজঃ শিক্ষা - Shikkhaa.com | Facebook
0 Response to "স্কুলে কোটি টাকার ডিজিটাল হাজিরা মেশিন অকেজো"
Post a Comment