
প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৪ বার চ্যাম্পিয়ন ট্রফি দিয়েছিল সানজিদারা
প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শিরোপা জিতেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছেন তারা। এই দলে রয়েছেন ময়মনসিংহের “কলসিন্দুর” গ্রামে বেড়ে ওঠা আট জন।
এই আটজন হলেন সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্দা, শিউলি আজিম, তহুরা খাতুন, শামসুন্নহার সিনিয়র, শামসুন্নাহার জুনিয়র, সাজেদা খাতুন ও মার্জিয়া আক্তার। তারা সবাই আলোচনায় আসেন ২০১১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এরপর আরও তিন বার চ্যাম্পিয়নের ধারা অব্যাহত রাখেন তারা।
তাদের নিয়ে নানা সময়ের যে ধরনের প্রতিবন্ধকতা পেরিয়েছেন সেইসব স্মৃতির কথা অনলাইন সংবাদমাধ্যম শিক্ষা ডটকমকে বলেছেন ময়মনসিংহের কলসিন্দুর নারী ফুটবল টিমের ম্যানেজার মালা রানী সরকার
তিনি বলেন, “অজপাড়া গাঁ কলসিন্দুরের এই মেয়েদের ফুটবল খেলাকে অনেকে ভালো চোখে দেখেনি। পরিবার থেকেও তেমন একটা সহায়তা পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে যখন তারা ভর্তি হয়, তখন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের বাধা আসে। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের মধ্যে শারীরিক নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। এ সময় তাদের ফুটবল খেলা পরিবারের সদস্যরা এবং স্থানীয় লোকজন ভালোভাবে নেয়নি।”
ফুটবল খেলতে গিয়ে নানা ধরনের কটূক্তিও শুনতে হয়েছে কলসিন্দুরের মেয়েদের। মালা রানী জানান, স্থানীয়রা মেয়েদের ফুটবল খেলায় উৎসাহ দেওয়ার পরিবর্তে বাধা দিয়ে বলতো, ফুটবল খেললে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে না। এছাড়া নানা ধরনের কটূক্তিও করতো। এ সময় স্থানীয় শিক্ষক এবং সমাজ সচেতন মানুষদের সহায়তায় খেলোয়াড়দের পরিবার ও স্থানীয়দের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়।
মালা রানী বলেন, “সাফ চ্যাম্পিয়নের প্রথম পাঁচ মিনিটে গোল করে শামসুন্নাহার জুনিয়র। সে ছোটবেলায় মাকে হারায়। গরিব-অসহায় পরিবারে তাকে যত্ন করার কেউ ছিল না। কিন্তু ফুটবল খেলার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ ছিল শামসুন্নাহারের। আগ্রহ দেখে আমি এক বছর তার খাওয়া-দাওয়ার দায়িত্ব নিই। এভাবে নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে প্রত্যেক মেয়ে জাতীয় দলে জায়গা করে নেয়। তবে ফুটবল কন্যা সাবিনার মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে কলসিন্দুরের মেয়েরা। সবাই সিদ্ধান্ত নেয়, তারা আর ফুটবল খেলবে না। এরপর তাদের বোঝানো হয় এবং দেশের কথা মাথায় রেখে ফুটবল খেলায় মনোনিবেশে আগ্রহী করে তোলা হয়। এভাবেই আজকের ফুটবল কন্যারা তৈরি হয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবলারের মুকুট ছিনিয়ে এনেছে।”
শিক্ষা ডটকমের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
------------------------------
প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, বৃত্তি, উচ্চশিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সংবাদ শিরোনাম, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, ছবি, ভিডিও পেতে শিক্ষা ডটকমের ফেইসবুক গ্রুপে ফলো করুন ( ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে )।
------------------------------
শিক্ষা ডটকমের ফেইসবুক পেইজঃ শিক্ষা - Shikkhaa.com | Facebook
0 Response to "প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৪ বার চ্যাম্পিয়ন ট্রফি দিয়েছিল সানজিদারা"
Post a Comment