-->
কুমিল্লায় ছয় শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই

কুমিল্লায় ছয় শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই

কুমিল্লায় ছয় শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক শূন্যতায় এসব বিদ্যালয়গুলো অনেকটাই অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছে। প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষকরাই এ পদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। 

জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আরও সাড়ে সাত শতাধিক সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া সহকারী শিক্ষকদের একটি অংশ প্রশিক্ষণে থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে অন্য শিক্ষকদের। একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজকর্মের দায়িত্বও রয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শুধু গ্রামের বিদ্যালয়ে নয়, নগরীর নামকরা বিদ্যালয়গুলোতেও রয়েছে এ সংকট। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মানসম্মত শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।

জানা গেছে, জেলার ২ হাজার ১০৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪ হাজার ৮৩২ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ৬৮ শতাংশই নারী শিক্ষক। এর মধ্যে জেলার ৬০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ এবং বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৭৫৮ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। শিক্ষক সংকটে থাকা বিদ্যালয়গুলোর কোনো শিক্ষক (নারী-পুরুষ) যখন অসুস্থ হন কিংবা মাতৃত্বকালীন বা অন্য কোনো কারণে ছুটিতে থাকেন তখন দায়িত্বরতদের পাঠদানে হিমশিম খেতে হয়। এ অবস্থায় একজন শিক্ষককে একটানা চার-পাঁচটি ক্লাসে পাঠদান করতে হয়। কোনো কোনো সময় একটি শ্রেণির পাঠদান বন্ধ রেখে অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে হয়। গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেই শিক্ষক সংকট রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষক সংকটের কারণে গুণগত শিক্ষার মান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে আদর্শ সদর উপজেলার ১৪টি, সদর দক্ষিণের ১২টি, লালমাই ২৬টি, লাকসাম ১৪টি, মনোহরগঞ্জ ৫৩টি, চৌদ্দগ্রামের ৩৮টি, নাঙ্গলকোট ৪৫টি, বরুড়া ১৪টি, চান্দিনা ৫১টি, দেবিদ্বারে ৩৮টি, বুড়িচংয়ে ৪৬টি, ব্রাহ্মণপাড়ায় ১৫টি, মুরাদনগরে ৪৩টি, দাউদকান্দিতে ৮৫টি, হোমনায় ৪৯টি, মেঘনায় ৪০টি, তিতাস উপজেলায় ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত হিসাবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কুমিল্লা শাখার সভাপতি ফয়জুন্নেছা সীমা বলেন, প্রধান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অভিভাবকহীন। পদ শূন্য থাকায় প্রধান শিক্ষকের কাজ অন্য আরেকজন শিক্ষককে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে করতে হচ্ছে। দায়িত্বের কারণে পাঠদানের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ, শ্রেণিকক্ষ পর্যবেক্ষণ, সভা-সেমিনারে অংশ নেওয়াসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হয়। এতে শিশুদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে শিক্ষক সংকট নিরসনের বিকল্প নেই।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান শিক্ষা ডটকমকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে নতুন নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। নতুন নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি শুরু হলে বিদ্যালয়গুলোর শূন্য পদ পূরণ হবে এবং সমস্যারও সমাধান হবে। শিক্ষক সংকট থাকলেও মানসম্মত পাঠদানের ক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। শিক্ষার্থীরা যেন যথাযথভাবে পাঠ্য গ্রহণ করতে পারে সে লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রতি আমাদের নজরদারি রয়েছে।

------------------------------

শিক্ষা ডটকমের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

------------------------------

প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, বৃত্তি, উচ্চশিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সংবাদ শিরোনাম, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, ছবি, ভিডিও পেতে শিক্ষা ডটকমের ফেইসবুক গ্রুপে ফলো করুন ( ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে )।

------------------------------

শিক্ষা ডটকমের ফেইসবুক পেইজঃ শিক্ষা - Shikkhaa.com | Facebook

0 Response to "কুমিল্লায় ছয় শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই"

Post a Comment

Ads