-->
শিক্ষকের বেত্রাঘাতে স্কুলছাত্রী হাসপাতালে

শিক্ষকের বেত্রাঘাতে স্কুলছাত্রী হাসপাতালে


গাজীপুরে হাতের আঙুলে মেহেদী দেওয়ার অপরাধে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। জেলার শ্রীপুর উপজেলার আবেদ আলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। প্রধান শিক্ষকের এমন অমানবিক আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক অভিভাবক।

ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমানের দ্বারা নির্যাতিতা হাসি মাওনা চৌরাস্তার পত্রিকা বিক্রেতা কাজল মিয়ার কন্যা।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলে জীববিজ্ঞান ক্লাস চলাকালে নবম শ্রেণির ছাত্রী তাইমুন নুসরাত হাসির বুকে ব্যথা অনুভব হয়। একপর্যায়ে ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করে। স্কুলের ডায়েরিতে বুক ব্যথার কথা লিখে প্রধান শিক্ষককে জানায় হাসি। এরপর অভিভাবককে স্কুলের পক্ষ থেকে আসতে বলা হয়। দ্রুত হাসির বোন সিলিয়া সিফাত টিবনী স্কুলে ছুটে যান। ছোটবোন হাসির অসুস্থতার কথা জানিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে ছুটির আবেদনও করেন টিবনী। হাসি ও তার বোন টিবনীকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ডেকে নিয়ে ছুটির কারণ জানতে চান প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাসি জানায়, পরবর্তীতে আমার বাম হাতের বৃদ্ধ আঙুলে মেহেদী দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে যান প্রধান শিক্ষক। এরপর লাঠি হাতে নিয়ে আমাকে পেটাতে থাকেন তিনি। এ সময় আমার বোন পাশেই দাঁড়ানো ছিল। আমি অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ি। এরপর কী হয়েছে বলতে পারিনি।

তার বড়বোন সিফাত বলেন, স্কুল থেকে ফোন করে আমার বোন অসুস্থ হওয়ার খবর দেয়। এরপর স্কুলে যাওয়ার পর প্রধান শিক্ষক আমার বোনকে ডেকে তার রুমে নেয়। সঙ্গে আমিও ছিলাম। এ সময় হাতের আঙুলে মেহেদী দেখে প্রধান শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে বলতে শুরু করেন মেহেদী দিতে পারো-আবার বুক ব্যথা কী! এ কথা বলেই লাঠি হাতে নিয়ে পেটাতে থাকে আমার বোনকে। এরপর অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে হাসি। তখন তার ডাক-চিৎকারে স্কুলের অন্য শিক্ষকরা এসে হাসিকে উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় হাসিকে।

শিক্ষার্থীর বাবা পত্রিকা বিক্রেতা মো. কাজল মিয়া শিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমার মেয়ে কোনো অন্যায় করলে তিনি শাসন করতে পারেন। কিন্তু অসুস্থ অবস্থায় মেহেদী পড়ার জন্য মারতে পারেন না। স্কুলের শিক্ষকরা আমাকে ডেকে নিয়েছিলেন। প্রধান শিক্ষক এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান বলেন, মেয়েটা অসুস্থ ছিল। পরিবারের লোক খবর দিয়ে এনে তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। মারপিটের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরুল আমিন শিক্ষা ডটকমকে বলেন, একজন অভিভাবক আমাকে টেলিফোন করে বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

0 Response to "শিক্ষকের বেত্রাঘাতে স্কুলছাত্রী হাসপাতালে"

Post a Comment

Ads