
একজন, দুজন শিক্ষার্থী নিয়েই ক্লাসে পাঠদান
সম্প্রতি সপ্তাহ ধরে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার অর্ধশতাধিক বিদ্যালয়ে ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।পাতলাশী নায়েব আলী প্রধান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেছে তৃতীয় শ্রেণিতে একজন, পঞ্চম শ্রেণিতে দু'জন শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছে। তবে চতুর্থ শ্রেণিতে কোনো শিক্ষার্থী নেই। অথচ হাজিরা খাতা অনুযায়ী এই বিদ্যালয়ে ৫৭ শিক্ষার্থী। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, চলাচলের রাস্তা খারাপ থাকায় আজ (৮ আগস্ট) শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম।
বারইহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণিতে পাঠদান করছেন প্রধান শিক্ষক কাহার মিয়া। এই শ্রেণিতে ১৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত একজন। চতুর্থ শ্রেণির কক্ষে ১৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত চারজন। তবে পঞ্চম শ্রেণির ১৫ জনের মধ্যে কেউ উপস্থিত নেই। শিক্ষক কাহার মিয়ার দাবি, অন্যদিন প্রায় সব শিক্ষার্থী থাকে।
মেদনার টেক ইউসুফ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯৪ শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষকের পদ পাঁচটির মধ্যে তিনটি পদই শূন্য। তবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত পাওয়া গেছে শুধু সহকারী শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিনকে। তিনি একটি কক্ষে একসঙ্গে তৃতীয় শ্রেণির পাঁচ, চতুর্থ শ্রেণির চার এবং পঞ্চম শ্রেণির পাঁচ শিক্ষার্থীকে পাঠদান করছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি একা তো, তাই বাধ্য হয়ে এভাবে পাঠদান করছি।'
আমাতুর টেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষকের মধ্যে কর্মরত তিনজন। এখানে তৃতীয় শ্রেণিতে ১০ জনের মধ্যে দু'জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১০ জনের মধ্যে তিনজন, পঞ্চম শ্রেণিতে ১০ জনের মধ্যে পাঁচ শিক্ষার্থীকে উপস্থিত পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষক বাছিরুজ্জামানের দাবি, শুধু আজকেই (৮ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম।
আংগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে মোট ১৭ শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে পাওয়া গেছে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিনথিয়া, রুহামা, লুৎফর রহমানের মতে, প্রতিদিন এই কয়েকজনই স্কুলে আসে।
মৃধা বাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণিতে ২৬ জনের মধ্যে পাঁচজন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৯ জনের মধ্যে আট এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ১২ জনের মধ্যে পাঁচ শিক্ষার্থী উপস্থিত। সাংবাদিক স্কুলে এসেছে খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসেন। অন্যদের মতো তিনিও বলেন, শুধু আজ (১০ আগস্ট) কম এসেছে।
চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে ২৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনকেও উপস্থিত পাওয়া যায়নি। চতুর্থ শ্রেণিতে ১৭ জনে দু'জন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ১৮ জনের মধ্যে তিন শিক্ষার্থী উপস্থিত পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষক নাইরীন শাহনাজ বলেন, গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় শিক্ষার্থী কম এসেছে।
ছোট বারইহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে মাত্র ১৩ জন পাওয়া গেছে।
টাঙ্গাব দক্ষিণ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১০ জনকে তিনটি শ্রেণিকক্ষে পাওয়া গেছে।
টাঙ্গাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি মিলিয়ে ২৩ জনকে উপস্থিত দেখা গেছে। একইভাবে পাইথল, নিগুয়ারী, দত্তেরবাজার, টাঙ্গাব, লংগাইর, চরআলগী ইউনিয়নের বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম দেখা গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবিদুর রহমানের ভাষ্য, প্রায়ই বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন করে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন তিনি। শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষা ডটকমের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
------------------------------
প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, বৃত্তি, উচ্চশিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সংবাদ শিরোনাম, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, ছবি, ভিডিও পেতে শিক্ষা ডটকমের ফেইসবুক গ্রুপে ফলো করুন ( ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে )।
------------------------------
শিক্ষা ডটকমের ফেইসবুক পেইজঃ শিক্ষা - Shikkhaa.com | Facebook
0 Response to "একজন, দুজন শিক্ষার্থী নিয়েই ক্লাসে পাঠদান"
Post a Comment