-->
মানারাত ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মেয়র আতিক

মানারাত ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মেয়র আতিক


নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজে (বিওটি) পরিবর্তন আনল সরকার। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান মনোনীত করে ইউনিভার্সিটির ১৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন বিওটি গঠন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (সেপ্টেম্বর) বিকেলে ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন  শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, পুনর্গঠিত বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, এনএসআই ও এসবি'র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রার উপস্থিত ছিলেন।

নতুন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্যান্য সদস্যরা হলেন-সাবেক সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মশিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. সাদেকা হালিম, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশের স্কুল অব বিজনেস অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত,  জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক ডক্টর মেখলা সরকার, ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সবুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম মাহমুদ, হাসুমনির পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপি, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন, সোশ্যাল ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মিহির কান্তি ঘোষাল। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-১৯৯২ (সংশোধিত-১৯৯৮) অনুযায়ী ২০০১ সালের ১০ মার্চ মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি স্থাপন ও পরিচালনার সাময়িক অনুমতি প্রদান করা হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ১৫ ধারা অনুযায়ী ‘প্রত্যেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য একটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ থাকবে এবং উক্ত বোর্ডের সদস্যগণের মধ্য হতে একজন সদস্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সভাপতি নির্বাচিত হবেন এবং উক্ত আইনের ৬(১) ধারা অনুযায়ী ‘প্রস্তাবিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে অনধিক ১১ (একুশ) কিন্তু অন্যূন নেয়) সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড অব ট্রাস্টি গঠন করতে হবে’।

বিদ্যমান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ‘২০১০ এর ৬(১০) ধারা অনুযায়ী প্রস্তাবিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর বিবেচিত হতে পারে এমন কোনো কার্যকলাপে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করবে না বা সন্ত্রাসী বা জঙ্গি তৎপরতা বা এই জাতীয় কোন কার্যকলাপে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কোনভাবেই কোন পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করবে না’ মর্মে বিধান রয়েছে।

তবে সরকারের বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়ান্দা সংস্থার বিশেষ তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দেখা গেছে যে, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমের সাথে গুড়িত থাকার অভিযোগ ও প্রমাণ রয়েছে। মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল এবং কলেজের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক কাজে লিপ্ত করার জন্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা তাদের রাষ্ট্র বিরোধী কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করতে উস্কে দেয়াসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। 

উগ্রবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী ও জামায়াত-শিবিরের উচ্চ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সাথে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারকদের গোপন যোগাযোগ রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানায়, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদে উস্কানি দেয়া, পরিকল্পনায় সহযোগিতা করা দেশের প্রচলিত আইন ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ৬(১০) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে। ইতোপূর্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বিভিন্ন প্রতিবেদন ও তথ্য উপাত্ত মোতাবেক সুস্পষ্ট হয় যে, এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সাথে যুক্ত বর্তমান বোর্ড অব ট্রাস্টিজ দাবিকারী ব্যক্তিগণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রাক্কালে কোন ধরনের অনুদান বা অর্থায়নের সাথে কখনো সম্পৃক্ত ছিল না এবং কোন আইন বা অনুমোদন বলে তারা প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়জিত হয়নি। উল্লিখিত পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ৩৫(৭) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সার্বিকভাবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রক্তন বোর্ড অব ট্রাস্টিজ ভেঙ্গে দিয়ে নুতন বোর্ড অব ট্রাস্টিজ গঠন করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানায়, দেশের গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সুপারিশ প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তক্রমে রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে এই ট্রাস্টিজ পুনর্গঠন করা হয়েছে। 

0 Response to "মানারাত ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মেয়র আতিক"

Post a Comment

Ads